সকলেই চেয়েছিলেন পূজোর মধ্যে একটু অন্য কিছু হোক। ভেঙে দিতে প্রচলিত প্রথা ভেঙে ব্রাহ্মণ্যবাদের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসতে। ভেঙে দিতে নারী-পুরুষের সমস্ত বিভেদ। তথাকথিত এলিট ক্যাম্পাসে অন্তত সরস্বতী পুজোয় অংশগ্রহণ থাকুক সর্বহারাদের। বাগদেবীর আরাধনা নিজেদের এই ভাবনা বাস্তবায়িত করলেন যারা, তারা সকলেই একে অপরের বন্ধু। বরানগরের ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট আইএসআইয়ের পড়ুয়ারা এবার প্রথা ভেঙে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করতে চেয়েছিলেন। সেখানকার পড়ুয়ারা ফেসবুকে নিজেদের গ্রুপে এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন। বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানের সিভি রমন ছাত্রাবাসে সরস্বতী পুজো করেন এক ছাত্রী, এক অব্রাহ্মণ ছাত্র ও এক মুসলিম পড়ুয়া। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হয় একটি প্রদর্শনীর। যেখানে প্রদর্শিত সব ছবি তালা ব্রিজের তলা থেকে উৎখাত হওয়া পরিবারগুলির শিশু এবং কৃষকরা এঁকেছে। চাঁদা সংগ্রহ করে ওই শিশু-কিশোরদের হাতে বই খাতা পেন পেন্সিল তুলে দেওয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে যারা এবার মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র-ছাত্রী তাদের হাতে দেওয়া হয়েছে ব্যাটারিচালিত আলো। যে তিনজন পুজোর দায়িত্বে ছিলেন তারা আচার-আচরণ তেমন জানতেন না। একটা মন্ত্র ও পদ্ধতির বই জোগাড় করে তিন চারদিন ধরে রীতিমতো রিহার্সাল করেছেন তারা। পূজার্চনা করা ছাত্রীর কথায় বুধবার রাতে তো ঘুম হয়নি। রাত জেগে আমরা তিনজন পুজোর কাজ শিখেছি। মন্ত্র উচ্চারণ করেছি। পুজোর পদ্ধতি গুলো করেছি। আবার কয়েকদিন ধরে আইএসআইয়ের পড়ুয়াদের কেউ কেউ টালা ব্রিজের তলা থেকে উৎখাত হওয়া পরিবারগুলোর কাছে বারবার গিয়েছেন। এই অভিনব পুজোর আয়োজন প্রশংসা পেয়েছে সকলের।