হুগলি জেলার একটা সুপ্রাচীন জনপদ হল চুঁচুড়া। অনেকেরই জানা রয়েছে যে চুঁচুড়া বহুকাল পূর্বে ওলন্দাজদের ঘাঁটি ছিল। আজও সেই আমলের বেশ কিছু স্থাপত্য শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এই শহরের দুর্গাপূজার কথা মনে আসলেই সবার প্রথমে আঢ্য বাড়ির দুর্গাপূজার কথা মনে পরে। দেখতে দেখতে যা এবছর ২৮৯ বছরে পদার্পন করল।
আঢ্য বাড়ির পূর্বপুরুষরা পূর্বে আদি সপ্তগ্রামে বসবাস করতেন। পরবর্তীকালে তাঁরা সেখান থেকে হুগলি জেলার চুঁচুড়ায় এসে বসবাস করতে থাকেন। তাঁরা প্রধানত ব্যবসায়ী পরিবার। পরিবারের সন্তান যোগীন্দ্রলাল আঢ্য ছিলেন হুগলির স্টেশান মাস্টার। যিনি জগু মাস্টার নামে অধিক পরিচিত ছিলেন। আঢ্য পরিবারের প্রাণপুরুষ ছিলেন সুবর্ণবণিক বদনচন্দ্র আঢ্য। বদনবাবুই চুঁচুড়ার পঞ্চাননতলায় আঢ্য বাড়িতে তিন খিলানযুক্ত সুন্দর কারুকার্যমন্ডিত একটি ঠাকুর দালান নির্মাণ করেন। এই ঠাকুর দালানে তিনি দুর্গাপূজা শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে যোগীন্দ্রলাল আঢ্যের সাত পুত্র ও তাঁদের উত্তরপুরুষরা পারিবারিক রীতি-নীতি মেনে পূজা করে আসছেন।
এই পরিবারের দুর্গাপূজার সূচনা রথযাত্রার দিন কাঠামো পূজার মাধ্যমে শুরু হয়। বংশ পরম্পরায় প্রতিমা গড়ে তুলছেন প্রতিমা শিল্পী। শুধু প্রতিমাশিল্পী নয় পুরোহিত ও মিষ্টি তৈরির পাচকও বংশ পরম্পরায় একই কাজ করে চলেছেন।
এখানে দেবী শিবদুর্গারূপে পূজিত হন। দেবী শিবক্রোড়ে অধিষ্ঠাতা। দেবী দ্বিভূজা অভয়দায়িনী শান্তিদাত্রী। তাঁর এক হাতে বরদানি ও ওপর দিকে তিনি অভয়দায়িনীরূপে বিরাজিতা। দেবীর সাথে লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী এবং কার্তিক থাকেন। প্রতিমা শোলা ও রাংতা দিয়ে ডাকের সাজে সজ্জিত হন। এছাড়া ডাকের সাজের উপর সোনা ও রুপার গহনা দেবীকে পড়ানো হয়।