বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষে অক্ষয়তৃতীয়া। আর এই তৃতীয়াতে আপনি যা কাজ করবেন এমনকি এই তৃতীয়ার দিন ঠিক যা যা করবেন তাই অক্ষয় হবে।তা ভালো অথবা পুন্য হোক না কেন। দান, গ্রন্থপাঠ, উপদেশ এবং ভগবানের নাম করলে সমস্ত কিছুই অক্ষয় হবে। আর যে কারণেই বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের এই বিশেষ তৃতীয়া অক্ষয়তৃতীয়া নামে পরিচিত। অক্ষয় তৃতীয়ার বেশকিছু মাহাত্ম্য আছে। যার জন্য এটি পালন করা শাস্ত্র সম্মত। আপনি দ্রুত জেনে নিন কিভাবে লকডাউনের বাজারে বাড়িতে বসেই অক্ষয় তৃতীয়া পালন করে খাতা পুজো করবেন। জেনে নিন বাড়িতে বসে এই পুজোর সমস্ত বিধি পালনের নিয়মাবলী। এই পুজোয় সিদ্ধিদাতা গণেশ এবং লক্ষ্মী দেবির পুজো করা হয়ে থাকে। শিবের বর পেয়ে প্রতি পুজোতেই বিঘ্ন নাশ কারি গণেশের পুজো করা হয় সর্ব প্রথম। তাই এই অক্ষয় তৃতীয়ার দিন গণেশ পুজো সর্বপ্রথম করতে হয়। তাতে আপনার সমস্ত বাধা কেটে সুখ সমৃদ্ধি ঘটবে। ২০২০ সালে এই অক্ষয় তৃতীয়ার তৃতীয় শুরু হয়েছে শনিবার বেলা ১১টা ৫১ থেকে এবং যা শেষ হবে রবিবার দুপুর ১টা ২২এ। সর্বপ্রথম যা করবেন তা হল ভোরে ঘুম থেকে উঠে নিজের ইষ্টদেবতাকে স্মরণ করুন এবং মাতা,পিতা হলো পরম গুরু, তাই তাদের প্রণাম সারবেন সকালেই। প্রাতঃস্নান করুন এবং তারপর সমস্ত রকম পূজার জোগাড় করে পুজোয় বসুন।
দুপুর একটা বাইশের আগেই পুজোয় বসবেন। পুজো শুরুর আগে আম পাতার মালা, ফুল পাতা, অালপনা দিয়ে সদর দরজাটি সাজিয়ে ফেলুন। এমনকি সবকটি দরজার মাথাতেও আপনি এই মালা লাগাতে পারেন। গনেশ এবং লক্ষ্মী দেবীর প্রিয় ফুল হলো লাল ফুল। তাই লাল ফুল অবশ্যই ব্যবহার করবেন পুজোর জন্য। সম্ভব হলে পদ্মফুল বা অল্প কিছু সাদা ফুল নেবেন। এরসাথে নৈবেদ্য সাজানোর জন্য ফল, হাতে গড়া নাড়ু, মোয়া দিতে পারেন। এরপর ধুপ, ধুনো দিয়ে প্রদীপ জ্বেলে, পুজো শুরু করুন। এরপর ঘটের মধ্যে গঙ্গাজল, গঙ্গা জল না থাকলে সাধারন জল দিতে পারেন। তবে তার সাথে অল্প কিছু গঙ্গাজল মিশিয়ে দেবেন। এরপর পাঁচটি পাতাবিশিষ্ট আমপাতা ঘটের মধ্যে রাখুন। তার উপরে একটি শসিস ডাব দিন। ডাব না থাকলে একটি কলা দিন। তবে ডাব বা কলার উপরে একটি স্বস্তিক চিহ্ন আঁকতে ভুলবেন না। এর সাথে ঘটেও একটি স্বস্তিক চিহ্ন অাঁকুন সিঁদুর দিয়ে। এরপর নতুন খাতাটি যেটিতে আপনি সমস্ত বছরের খরচ এবং জমা লিখবেন সেই খাতাটির মধ্যে একটি পবিত্র স্বস্তিক চিহ্ন অাঁকুন। এই স্বস্তিকের মাথায় সিঁদুর দেওয়া ছাপ দিন ১ টাকার কয়েনের বা রূপোর কয়েনের।
এরপর ফুল দিয়ে পুজো করুন এবং মূর্তির পাশে নতুন খাতাটি এবং পয়সাটি সহ রেখে দিন। আপনার জানা মন্ত্র পাঠ করুন। ইষ্ট মন্ত্র জপ করতে ভুলবেন না। এরপর আরতি শুরু করুন ধুপ, ধূন, ফুল এবং প্রদীপ দিয়ে। আরতির সময় অবশ্যই শাঁখ বাজাবেন। এরপর সকলের জন্য প্রার্থনা করুন যাতে পরিবারের সকলে ভালো থাকে। এদিন খারাপ কাজ বা মিথ্যাচার করবেন না। যে ব্যক্তি পূজা পাঠ করছেন সেই ব্যক্তি নিরামিষ আহার করুন এবং যথা সম্ভব জপধ্যান করুন সারাদিন। তবে এদিন আপনি কোন ব্যক্তিকে খালি হাতে ফেরাবেন না, দান করুন। কারণ এই অক্ষয় তৃতীয়ার ফল হল অক্ষয় হওয়া। আপনি ভালো কাজ বা খারাপ কাজ যাই করবেন তাই অক্ষয় হয়ে থাকবে। তাই অক্ষয়তৃতীয়া পালন করুন লকডাউন মেনেই।