ঋদি হক, ঢাকা:- বনধ্ চলাকালীন অন্যান্য যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও সচল থাকে ট্রেন চলাচল। বড় ধরণের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ছাড়া ট্রেনের চাকা বন্ধের ইতিহাস নেই। এবারেই ঘটলো ব্যতিক্রম। করোনা ভাইরাস রুখতে গত ২৬ মার্চ সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে লকডাউনে যাওয়ার আগেই যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছিল। টানা একমাসের অধিক সময় ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকা ইতিহাসে এই প্রথম। কৃষকদের রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্যশস্য ও কাঁচাশাব্জি পরিবহণে আজ থেকে চালু হচ্ছে পণ্যবাহীবা পার্সেল এক্সপ্রেস ট্রেন। রেলপথ মন্ত্রক জরুরি বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রীবাহী ট্রেনচালাচলেরও চিন্তা করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে প্রতিটি কামরার নির্দিষ্ট সংখ্যক টিকিট বিক্রির করা হবে। যাতে করে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে যাত্রী সেবা সচল রাখা যায়। বাংলাদেশে এবার প্রতিটি ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধান, শাক-শব্জি থেকে শুরু এমন কোন ফসল নেই যার উৎপাদন হয়নি। এসব পশনশীল খাদ্যসামগ্রী পরিবহনে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা, ঢাকা-দেওয়াগঞ্জ-ঢাকা, এবং ঢাকা-খুলনা-যশোর-ঢাকায় পণ্যপরিবহণে প্রাথমিক অবস্থা শুক্রবার থেকে ট্রেন চালু করা হলো। রেলভবন এক বার্তায় জানিয়েছে, লকডাউন অবস্থায় এসব ট্রেনগুলো মালামাল পরিবহন করবে। চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টায় ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছাবে রাত সাড়ে ১০টায়।
ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ- ঢাকা রুটের ট্রেনটি দেওয়ানগঞ্জ থেকে ছাড়বে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় এবং ঢাকায় পৌঁছাবে রাত সোয়া ৩টায়। এ দুটি রুটের ট্রেন সপ্তাহের ৭দিনই চলাচল করবে। আর খুলনা-ঢাকা-খুলনা রুটের ট্রেন খুলনা থেকে ছাড়বে বিকাল পৌনে ৫টায়, ঢাকায় পৌঁছাবে রাত সাড়ে ৩টায়। এটি সপ্তাহে তিন দিন শুক্র, রবি ও মঙ্গলবার চলাচল করবে। পথে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে থেমে পণ্য ওঠানামার করা হবে। বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষিতে লকডাউন অবস্থায় কৃষকের উৎপাদিত পণ্য, শাক-সবজি, খাদ্য ও পচনশীল সামগ্রী পরিবহনের জন্য এ ট্রেন চলাচল করবে। রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার পরিকল্পনা তো রাখতেই হবে। কারণ যখনই সরকার গণপরিবহন চলাচলের নির্দেশ দেবে, তখন থেকে ট্রেন চলাচলও শুরু হবে। আমরা সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এই সময়টার মধ্যে রেলওয়ের ট্র্যাকগুলো রিপেয়ারিং করা হচ্ছে। সরকারের গ্রীন সিগন্যাল পেলেই ট্রেনের হুইসেল বেজে ওঠবে। করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে ২৬ মার্চ থেকে বাংলাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তীতে তা কয়েক দফা বাড়িয়ে ৫ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। আর প্রয়োজনে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে শতভাগ রপ্তানিখাত পোশাককারখানা শর্তসাপেক্ষে খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। সাধারণ ছুটির মধ্যেও ঢাকায় রাস্তায় এখন লোকের চলাচল বাড়তে শুরু করেছে। সবচেয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।