গোটা বিশ্ব জুড়ে করোনার ভয়াল গ্রাসে অস্থির অবস্থা মানব জাতির। আজই এক লক্ষ ছাড়িয়েছে ভারতবর্ষে আক্রান্তের সংখ্যা। বাংলাতেও প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের হিসাব। এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে প্রকৃতিও যেন বিরূপ হয়ে উঠেছে। আসছে আমফান।শেষ ২১ বছরের মধ্যে সর্বাধিক শক্তি সম্পন্ন ঝড়। ইতিমধ্যেই ক্রমশ তার শক্তি বৃদ্ধি করতে শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রী আমফান নিয়ে বেশকিছু নির্দেশিকা জারি করেছেন। জানা গেছে আগামী কাল দুপুর বারোটার মধ্যে এ রাজ্যে ঢুকবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রবল বেগে রাজ্যে প্রবেশ করবে আগামীকাল দুপুরের পর থেকে। দুপুর ১২ টার পর থেকে মানুষকে বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করেছেন। বৃহস্পতিবার সরকারি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেককে বাড়িতে থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। আমফানের মূলত তিনটি ভাগ হেড, আই এবং টেল। প্রথমে আঘাত আনবে হেড।তারপর আয় এবং সবচেয়ে মারাত্মক টেল। আর এই টেলএই উড়িয়ে নিয়ে যায় সবকিছু। যেটা ফোনির ক্ষেত্রে উড়িষ্যায় হয়েছিল। এখনো পর্যন্ত আমফানের যা অবস্থান তাতে করে আইলার চেয়েও ভয়ঙ্কর ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে রাজ্য। বিশেষ করে পশ্চিম মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনার অবস্থা মারাত্মক হতে পারে। প্রভাব পড়বে হাওড়া, হুগলি কলকাতাতেও। ইতিমধ্যেই রাজ্য কন্ট্রোলরুম খুলেছে। কন্ট্রোল রুমের নাম্বার হলো
কন্ট্রোলরুম নম্বর- ২২১৪৩৫২৬, ২২১৪১৯৯৫, টোল ফ্রি নম্বর- ১০৭০।এদিন বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আজ যেটা অরেঞ্জ জোন, কাল সেটা রেড জোন হয়ে যাবে। রেড, রেড প্লাস, রেড স্টার জোন। তবে এগুলো করোনা জোন নয়, এটা আমফান জোন। ঝড়ের ৩টি ধাক্কা, হেড, আই ও টেইল। প্রথম ধাক্কা পেরিয়ে গেলেই বেরিয়ে পড়বেন না। তাতে বিপদ বাড়বে। কাল দিনভর কলকাতা ও জেলায় জেলায় অতি ভারী বৃষ্টি হবে। এমনই পূর্বাভাস রয়েছে। তাই দুর্যোগ না কাটা পর্যন্ত বাড়িতেই থাকুন। বাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকলে অবিলম্বে প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। সাইক্লোন শেল্টারে চলে আসুন।”আমফান মোকাবিলায় মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে টাস্ক ফোর্স ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২ লাখ, উত্তর ২৪ পরগনায় ৫০ হাজার, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৪০ হাজার ও পূর্ব মেদিনীপুরে ১০ হাজার- অর্থাৎ মোট ৩ লাখ মানুষকে সরিয়ে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি জানান, যেহেতু এই সময় করোনার সংক্রমণের আতঙ্কও রয়েছে। তাই আমফানের পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় সমস্ত সাইক্লোন শেল্টারগুলি স্যানিটাইজ করা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পানীয় জল ও বেবিফুডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামীকাল মুখ্যমন্ত্রী নিজে সারারাত নবান্নে থাকবেন। সেখান থেকেই তিনি সারা রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবেন বলেও জানা গেছে ।