জেলা

হুগলি তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে, দলের মীরজাফরদের পেটানোর হুঁশিয়ারি মন্ত্রীর।

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কঙ্কালসার দশা এবার প্রকাশ্যে। সংবাদ মাধ্যমের সামনে খোদ তৃণমূল জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূল সমর্থিত আরামবাগের সাংসদ তথা হুগলি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেটর অপরুপা পোদ্দার। তৃণমূলের জেলা সভাপতি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে অপরূপা পোদ্দার জানান, তার এলাকায় জেলা সভাপতি কর্মসূচি করছেন কিন্তু তিনি জানতে পারছেন না। তাকে অন্ধকারে রেখে দলীয় কর্মসূচি করছেন জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব। এর ফলে কর্মীদের মনোবল ভাঙতে বলেও জানিয়ে দিলেন তিনি।

এর রেশ কাটতে না কাটতেই নাম না ধরে হুগলি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দিলীপ যাদবের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন হুগলি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তিনি জিতবেন। আর তারপর বিজেপি, সিপিএম ও তার দলের মীরজাফরদের পেটানো শুরু করবেন তিনি। চক্রান্ত করা করে কেউই তাকে হারাতে পারবে না। তার সাথে তার কর্মীরা রয়েছেন। আগামী নির্বাচনের পর সবকিছুই সুদে আসলে বুঝে নেবেন তিনি।

যদিও জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব অবশ্য সাংসদ অপরুপা পোদ্দার ও প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত কথায় গুরুত্ব দিতে নারাজ।

প্রসঙ্গত, হুগলি জেলায় তিনটি লোকসভার মধ্যে দুটি লোকসভায় জোড়া ফুল ফুটলেও হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে পদ্মফুল ফোটে। এরপরে তৎকালীন জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্তকে সরিয়ে জেলা সভাপতি করা হয় দিলীপ যাদবকে। কয়েকদিন যাবৎ তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্ব দিলীপ যাদবের বিরুদ্ধে একেরপর এক বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। কয়েকদিন আগে বেচারাম মান্না ও প্রবীর ঘোষাল নাম না করে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। আর তৃণমূলের এই অন্তর্দ্বন্দ্বে যথেষ্টই অস্বস্তিতে বেআব্রু শাসক শিবির বলে মত রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের।

যদিও তৃণমূলের দ্বন্দ্বকে হাতিয়ার করতে ছাড়েনি গেরুয়া শিবির। আরামবাগ বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিমান ঘোষ বলছেন, আসলে তৃণমূলের এটাই ঐতিহ্য। সমস্যা এটা নয়, মূল সমস্যা তৈরি হয়েছে কাটমানি খাওয়া নিয়ে। তা নিয়েই দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে বেশি মুখ না খোলায় ভালো। সারা রাজ্যজুড়েই এই দ্বন্দ্ব চলছে।

যত দিন যাচ্ছে ততই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিচ্ছে হুগলি জেলায়। রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলিতে জেলা কমিটি ও ব্লক কমিটি গঠন হলেও এখনও হুগলি জেলায় কমিটি গঠন করে উঠতে পারেনি দল। আর এতে করে কিছুটা হলেও কর্মী-সমর্থকদের মনে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে বলেই সূত্রের খবর। এখন দেখার দলের এই ডামাডোলের পরিস্থিতি সামাল দিতে তৃণমূলের ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোর সর্বোপরি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি পদক্ষেপ নেয়। এই মুহূর্তে তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি। শাসকের এই দ্বন্দ্ব বিজেপির অ্যাডভান্টেজ হয়ে যায় কিনা সেই দিকেও তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

Loading

Leave a Reply