নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক সভায় কোন দল কত লোক সমাগম করতে পারে তা নিয়ে শুরু হল লড়াই। এক লাখের পাল্টা তিন লাখ। নন্দীগ্রামের সদ্য প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, আগামী কাল তার জনসভায় জমায়েত হবে এক লক্ষ বেশি মানুষ। শুভেন্দুর এক লাখ জনতার সমাবেশকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান জানিয়েছেন, “আগামী ১৮ তারিখ তেখালিতে জনসভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। দলনেত্রীর ওই সভায় তিন লাখ মানুষের সমাগম হবে। দেখিয়ে দেব সভা কাকে বলে।”প্রসঙ্গত আজকেই নন্দীগ্রামের তেখালিতে জনসভা করার কথা ছিল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়ের।
কিন্তু দলের নেতা অখিল গিরি কোভিড আক্রান্ত হওয়ায় সেই সভা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। যদিও নন্দীগ্রাম শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেস একটি কর্মী সভার আয়োজন করে নন্দীগ্রাম কলেজ মাঠে। সেই সভায় দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী’র সামনেই শেখ সুফিয়ান জানান আগামী ১৮ তারিখের সভায় তাঁরা তিন লাখের জমায়েত করবেন।ভোট যত এগোচ্ছে আরও একবার নন্দীগ্রামে লাগছে রাজনীতির রঙ। সব পক্ষই চাইছেন নন্দীগ্রামে অস্তিত্ব প্রমাণ করতে। নতুন বছরের তৃতীয় সপ্তাহেই তাই নন্দীগ্রামে সভা করতে চলেছেন তৃণমুল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমুল সূত্রে জানানো হয়েছে আগামী ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের তেখালিতে তিনি সভা করবেন।২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের গণ আন্দোলনে ৩ জনের মৃত্যু হয়। এই দিনটিকে স্মরণ করে প্রতি বছর স্মরণ অনুষ্ঠান করেন শুভেন্দু অধিকারী। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমুল নেতৃত্বের বক্তব্য “মুখ্যমন্ত্রী আসছেন সভা করতে। নন্দীগ্রামের সাথে তার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তিনি ১৮ জানুয়ারি দিনটিকে বেছে নিয়েছেন আন্দোলনকারীদের স্মৃতিতে সম্মান জানিয়ে।” যদিও রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, সদ্য তৃণমুল ছেড়ে বিজেপি’তে গিছেন শুভেন্দু অধিকারী। ছেড়েছেন বিধায়ক পদ। নন্দীগ্রামের বিধায়ক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ফলে সেই নন্দীগ্রামে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সভা ঘিরে আগ্রহ তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।প্রসঙ্গত, দু’সপ্তাহ আগেই শুভেন্দুর গড়ে সভা করেছে তৃণমুল কংগ্রেস। সেখানে একাধিক নেতা দাবি করেছেন, নন্দীগ্রাম আন্দোলন ছিল স্থানীয়দের।
মমতা বন্দোপাধ্যায় সেই আন্দোলনে যোগ দিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যার জেরে সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে গিয়েছে এই আন্দোলন। কাঁথিতে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুকে আক্রমণ করে সৌগত রায় বলেছেন, “মমতা না থাকলে নন্দীগ্রাম আন্দোলন হত না। নন্দীগ্রাম আন্দোলন সুফিয়ানের মতো স্থানীয় নেতারা করেছেন। কোনো সরস্বতীর বরপুত্র এসে সুন্দর দেখতে মানুষ এসে আন্দোলন করেননি।” এখন সেই আন্দোলন ভূমিতে মমতা বন্দোপাধ্যায় কি বলেন সে দিকেই চেয়ে রাজনৈতিক মহল। ৭ জানুয়ারি সকালের আগেই শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়েই।
