দেশ

হিন্দু বাড়ির উঠানে রমজানের প্রথম রোজা খুললেন কাশ্মীরি দুই যুবক

করোনা আতঙ্কের মধ্যেই যখন বিভিন্ন হিংসার চিত্র সামনে আসছে, মহারাস্ট্রে সাধু মৃত্যুর ঘটায় তোলপাড় সারা দেশে। সেই আবহেই সম্প্রীতির অনন্য নজির দেখা গেল বাংলাতে। পূর্ব বর্ধমানের শহরের সম্প্রীতি নজির গড়লেন কংগ্রেস নেত্রী রাইমণি দাস। দুই কাশ্মীরি মুসলিম যুবকের পাশে দাঁড়ালেন তিনি। রবিবার তার বাড়িতেই অনুষ্ঠিত হল নামাজ। শুরু হল রমজান মাসের প্রথম ব্রত উদযাপনও। হিন্দু বাড়িতেই রমজানের প্রথম রোজা খুললেন কাশ্মীরের দুই।




জান গেছে, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই কাশ্মীরের দুই বাসিন্দা কাশ্মীরি পোশাক বিক্রির জন্য বর্ধমানে আসেন। তাদের বাড়িতেই ঘরভাড়া নিয়ে থাকেন। এই সময় বাড়ি ফিরে যান কাশ্মীরে। কিন্তু এবার করোনার জেরে পরিস্থিতিতে আটকে পড়েছেন বর্ধমানে। ফলে কীভাবে তাঁরা এই রমজান মাসের ব্রত পালন করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। কারণ সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানই বন্ধ। সমস্ত ধরনের জমায়েত বন্ধ করা হয়েছে। ফলে তাঁরা রীতিমতো সমস্যার মুখে পড়েছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে ওই দুই কাশ্মীরী যুবক এহমত ভাই এবং মঞ্জুর ভাইকে দুশ্চিন্তা মুক্ত করার উদ্যোগ নেন বাড়ি মালিক।




এদিন বাড়িতে দুই মুসলিম যুবক রমজানের রোজা রাখেন এবং রবিবার সকালে দাস পরিবারের পক্ষ থেকেই তাঁদের ইফতারের সমস্ত আয়োজন করে দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট সময়ে বাড়িতেই নামাজ পরেন তাঁরা। ওই যুবকরা বলেন, যেহেতু ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না ও মসজিদে যাওয়াও নিষেধ। তাই আমরা সত্যিই চিন্তায় ছিলাম। এদিন যেভাবে দাস পরিবারের মানুষ এগিয়ে এসেছেন তা কখনও ভাবতেই পারিনি। এই ধরনের অভিজ্ঞতা প্রথম হল।



রাইমণিদেবী বলেন, বাংলা চিরকালই সম্প্রীতির বাংলা। এখানে নেই কোনও ভেদাভেদ। আমরা সকলে মানুষ। এর থেকে বেশি কিছু হতে পারে না। ওই দুই মুসলিম যুবক রোজা রাখা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। তাঁদের সহযোগিতা করাই ধর্ম বলে মনে করে এগিয়ে এসেছি। আমরা সব ভেদাভেদ ভুলে এগিয়ে এসেছি। স্বাভাবিক ভাবে ওই মহিলার কর্মকাণ্ডে স্তম্ভিত সাধারণ মানুষ। তাদের এই কর্মকাণ্ড প্রমান করল কবি নজরুল ইসলামের লেখা কবিতা ‘ মোরা একই বৃন্থে দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান’।


Loading

Leave a Reply