ফিচার রাজ্য

ত্রিশূল নয়, জীবনের অস্তিত্বের লড়াইয়ে তেলের পাইপ হাতে ‘অন্য দুর্গা’

জগতে দুটি শক্তি আছে, একটি কলম আরেকটি তলোয়ার। আর এ দুটির চেয়েও দৃঢ় একটি শক্তি আছে, যার নাম ‘নারী’।এই নারী শক্তির একটা বড়ো উদাহরণ আছে পারুলের একটি পেট্রোল পাম্পে।এই পেট্রোল পাম্পে দুটি মেয়ে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে ,হাসতে হাসতে তেল ভরে দিচ্ছে ছোটো বড়ো বিভিন্ন গাড়িতে।তারই নজির দেখা গেলো পারুল পেট্রোল পাম্পে।তাদের মধ্যে একটি মহিলা প্রায় ৮ বছর ধরে কাজ করছেন এখানে।এই পাম্পে কর্মরত একটি মহিলা কে তার কাজ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান প্রায় বছর দুই ধরে কাজ করছেন তিনি।পেট্রোল পাম্পের কিছুটা পাশেই বাড়ি ওনার।স্বামী, সন্তান,শ্বশুর,শ্বাশুড়ি সহ ভরা সংসার কর্মরত ওই মহিলার।ওনার নাম অর্পিতা দেওয়ান। মূলত স্বামীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য এবং ছেলে মেয়েকে ভালো ভাবে মানুষ করার উদ্দশ্যে এই কাজে নিযুক্ত হয়েছেন অর্পিতা,এমনটাই জানাচ্ছেন উনি। এই পেট্রোল পাম্পের বর্তমান মালিক প্রসেনজিৎ পালকে এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন – কলকাতার বেশ কিছু পেট্রোল পাম্পে মহিলাদের স্মার্টলি এই কাজ করতে দেখেছি।সেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।এই সিদ্ধান্তে আমি অনেক খুশি।শুধু তাই না তাদের মসৃণ ব্যবহারে কাস্টমাররাও অনেকই সন্তুষ্ট।এই পাম্পে কার্মরত একজন মহিলার সবিত অধিকারীর স্বামী ব্রেন স্ট্রোকে অসুস্থ প্রায় ১০ বছর ধরে।যিনি একসময় বাসের কন্ট্রাক্টর ছিলেন।কষ্টের মধ্যে চলছে সংসার। সবীতা প্রায় ৮ বছর ধরে কাজ করছেন এখানে।একা হাতেই স্বামী,স্কুল পড়ুয়া পুত্র,শ্বাশুড়ি ও অসুস্থ স্বামীকে সামলাচ্ছেন।অভাবের সংসারে একমাত্র রোজগেরে উনিই।পেট্রোল পাম্পের মালিকের কথায় প্রথমে ৪ জন মহিলাকে নিয়ে এই কাজ শুরু করলেও বর্তমানে আছেন ২ জন মহিলা যারা সংসার সামলানোর পাশাপাশি সমান তালে এই কাজ করে যাচ্ছেন ।দসভূজা দুর্গা দশটি হাতের দ্বারা সামলেছেন সব দিক।এইদশভূজা দুর্গা বাঙালি নারীর জন্য এক অনন্য অনুপ্রেরণার প্রতীক। দশটি হাত দিয়ে একাই সামলে নিচ্ছেন চারপাশ। যেমনটা আমাদের সমাজে নারীরা প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছেন।তারই একটি প্রত্যক্ষ উদাহরণ পেট্রোল পাম্পে কর্মরত মহিলা দুজন।

Loading

Leave a Reply