জেলা

‘রেড’ জোন থেকে ‘গ্রিন’ জোনে ফিরতে চাইছেন শিল্পাঞ্চলের কয়েক হাজার যৌনকর্মী

‘রেড’ জোনে থাকা মহিলারা এখন ফিরতে চাইছেন ‘গ্রিন’ জোনে। অন্ধকার গলি ছেড়ে তাঁরা চাইছেন অন্য পেশায় আলোর দিশা পেতে। ক্ষুদ্র কুটিরশিল্পে অথবা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মতো তাঁদেরও সরকারি কাজে লাগানো হোক, এমনটাই চাইছেন শিল্পাঞ্চলের প্রায় সাড়ে তিন হাজার মহিলা যৌনকর্মী। করোনা আতঙ্কে লকডাউনের জেরে রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিল্পাঞ্চলের রেডলাইট এলাকায় থাকা প্রায় তিন হাজারের বেশি যৌনকর্মী মহিলা অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন। লকডাউনের শুরুতে বিভিন্ন সংস্থা থেকে ত্রাণ মিললেও চলতি মাস থেকে পেটে টান ধরতে শুরু করেছে তাঁদের। তাই এবার পেশা বদলে সম্মানের সঙ্গে অন্য পেশায় যেতে আগ্রহী তাঁরা।

জানা গিয়েছে, দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে থমকে রয়েছে জনজীবন। মার্চ মাসে লকডাউন শুরু হতেই সমস্ত ব্যবসার মতো যৌনকর্মীদেরও রোজগার বন্ধ। প্রথমদিকে খাদ্যাভাব না হলেও লকডাউনের সময়সীমা বাড়ার পাশাপাশি কমতে থাকে সহযোগিতা। সংসারের খরচ চালানো দায় হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি করোনার দাপট কমার কোনও আশা দেখতে না পেয়ে অনিশ্চিয়তার মুখে পড়েছেন। যৌনপল্লি সমিতির সদস্যদের অনুমান, অন্যান্য কর্ম সংস্থান ও ব্যবসা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলেও এই পেশা স্বাভাবিক হওয়ার নিশ্চয়তা নেই। অন্যান্য পেশায় সরকারি সাহায্য মিললেও তাঁদের কোনও আর্থিক সহায়তা মিলবে না। তাই এবার দুর্গাপুরের কাদারোড ও আসানসোলের চাপকা সহ আরও কয়েকটি নিষিদ্ধ পল্লির যৌনকর্মীরা সরকারি প্রকল্পের আওতায় স্বনির্ভর হতে চাইছেন।

কাদারোড যৌনপল্লির দুর্বার শাখা সংগঠন পদাতিকের সম্পাদক নীলকমল মিশ্র বলেন, এইরকম পরিস্থিতিতে এই পেশা নিরাপদ নয়। আমাদের এখানে প্রায় আটশো যৌনকর্মী রয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই স্টেশনারি জুয়েলারি তৈরি করতে জানেন। আবার অনেকে নকশা করা কাঁথা সেলাই করতে পারেন। এখানকার মহিলারা চাইছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে সরকারি প্রকল্পের ক্ষুদ্র শিল্পের প্রশিক্ষণ নিতে। মাস্ক, স্যানিটাইজার তৈরি, মাছচাষ, ইমিটেশনের জুয়েলারি তৈরি বিভিন্ন কাজের সঙ্গে তাঁদের যুক্ত করা যেতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই পরিবারের জন্য কোনওরকমে একবেলার খাবার জোগান দিচ্ছি। কিন্তু এভাবে কতদিন আর চলবে। তাই আমরা সরকারের কাছে আবেদন রাখছি বিকল্প কোনও পেশার জন্য তাঁদের সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হোক।আসানসোল চাপকা যৌনপল্লির প্রজেক্ট ম্যানেজার রবি ঘোষ বলেন, এই এলাকার অবস্থাও একই।কোনওরকমে তাঁদের খাবার জোগান দিচ্ছি। কিন্তু এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। তাই মহিলারা সকলেই হস্তশিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রোজগার করতে চায়। বিকল্প রোজগারের জন্য সরকারি সাহায্য চায়।

Loading

Leave a Reply