রাজ্য

অপারেশন থিয়েটারে যাবার আগেই মা হয়ে গেলেন গীতাঞ্জলি।

এবার কলকাতার ডাক্তাররা বড় সরো সাফল্য পেলো। বিশ্বজুড়ে করোনা আতঙ্কের মাঝেই চিকিৎসক নার্স স্বাস্থ্যকর্মীরা যেভাবে মৃত্যুকে দূরে সরিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তা সত্যিই এক ব্যতিক্রমী দৃশ্যের জন্ম দিচ্ছে। কলকাতাও তার ব্যতিক্রম নয়। করোনা ভয়কে হেলায় দূরে ঠেলে প্রতিদিনই বহু মুমূর্ষু রোগী কে সুস্থ করে তুলছেন চিকিৎসকরা।তবে শনিবার এক বিরল দৃশ্য এর সাক্ষী থাকলো সল্টলেক আমরি হাসপাতাল। শনিবার বিকেল সাড়ে চারটে, এমার্জেন্সি বা জরুরি বিভাগের সামনে গাড়ি করে এক সন্তানসম্ভবা মহিলাকে নিয়ে আসা হয়। গীতাঞ্জলি সিং,নামে ওই মহিলা সল্টলেকের বিএসএফ ক্যাম্পের বাসিন্দা। তার স্বামী বিএসএফ জওয়ান। জরুরি বিভাগে আনা মাত্র চিকিৎসকরা দেখতে পান তীব্র প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছেন গীতাঞ্জলি দেবী। দ্রুত ছুটে আসেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ও শিশু বিশেষজ্ঞরা। গীতাঞ্জলি দেবীর শারীরিক অবস্থা হতে দেখে তারা বুঝতে পারেন অপারেশন টেবিলে যাওয়ার মত আর সময় নেই। সঙ্গে সঙ্গে তারা জরুরি বিভাগেই অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন। দ্রুত ইমার্জেন্সির একটি অংশ ঘিরে ফেলে সেই অংশটি জীবাণুমুক্ত বা স্যানিটাইজ করে চিকিৎসকের অস্ত্রোপচার শুরু করে দেন। সফল অস্ত্রোপচার এর পর পুত্র সন্তানের জন্ম দেন গীতাঞ্জলি সিং।সন্তান জন্মানোর পর গীতাঞ্জলি দেবীকে আমরি হাসপাতালেই রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সদ্যোজাত শিশুটিকে শিয়ালদহ এনআরএস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।

মা হওয়ার পর গীতাঞ্জলি দেবী চোখের জল ধরে রাখতে পারে নি। তার একটাই কথা,’ এই চিকিৎসকরা আমার কাছে সব,এরাই আমার ঈশ্বর। এরা না থাকলে আমি সন্তানের জন্ম দিতে পারতাম না। আর আমিও বেঁচে থাকতাম কিনা জানিনা।’অন্যদিকে সফল অস্ত্রোপচার এর পর চিকিৎসকরাও যারপরনাই খুশি। আমরি হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রেনু সিং জানান,’ একজন চিকিৎসকের কাছে এর থেকে বড় আর কি হতে পারে! মা ও সন্তান সুস্থ আছে,এটাই সবথেকে বড় প্রাপ্তি।’ আমরি হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সৌম্যব্রত আচার্য বলেন,’ দ্রুতো অস্ত্রোপচার না করলে মা এবং সন্তানকে বাচাঁনো অত্যন্ত কঠিন ছিল। করোনা তো কি হয়েছে! তাই বলে তো আর চিকিৎসা থেমে থাকতে পারে না,গীতাঞ্জলি তুমি কে সুস্থ করে তুলতে পেরেছি এবং তার সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে পেরেছি এটাই সবথেকে বড় খুশি আজকের দিনে।’

Loading

Leave a Reply